প্রশ্নঃ?
বরাবর
মুফতী তাহমীদ শামী হুজুর!
আপনার কাছে জানার বিষয় হলো-মুসলমানদের জন্য পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা জায়েয হবে কিনা? যেমন বৈশাখী পোষাক পরিধান করা, বৈশাখী মেলা উদযাপন করা, ইলিশ-পান্তা খাওয়া, মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো, কপালে সিঁদুর দেয়া, মঙ্গল সুতা দিয়ে রাখি বাঁধা, নানারকম উল্কি আঁকা ইত্যাদি৷
বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো! ধন্যবাদ হুজুর!!
প্রশ্নকারীঃ
হাফেজা তানিয়া ইসলাম তনি
ঢাকা, বাংলাদেশ৷
☞ উত্তরঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা বিজাতীয় ও বিধর্মীদের কৃষ্টিকালচার৷ যা মুসলিমদের জন্য পালন করা সম্পুর্ন নাজায়িয ও হারাম৷ যেমন- কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন–
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺪِّﻳﻦَ ﻋِﻨﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡُ.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। (সূরাহ আল ইমরান ১৯ আয়াত৷)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন–
ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺒْﺘَﻎِ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻹِﺳْﻼﻡِ ﺩِﻳﻨًﺎ ﻓَﻠَﻦْ ﻳُﻘْﺒَﻞَ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳﻦَ.
আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম (বিধর্মী বা বিজাতীয়দের কৃষ্টি-কালচার) অন্বেষণ করবে, তার থেকে তা কখনই গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরাহ আল ইমরান ৮৫ আয়াত৷)
হাদীস শরীফে বর্নিত হয়েছে-
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ” .
হযরত ইবনু উমার রাযিঃ থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদেরই দলভুক্ত গণ্য হবে। সনদ হাসান সহীহ৷ (সুনানে আবূ দাউদ ৪০৩১ হাদীস৷)
অতএব পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের নামে বৈশাখী পোষাক পরিধান করা, বৈশাখী মেলা উদযাপন করা, ইলিশ-পান্তা খাওয়া, মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো, কপালে সিঁদুর দেয়া, মঙ্গল সুতা দিয়ে রাখি বাঁধা, নানারকম উল্কি আঁকা, ঢাকঢোল ও কাসার ঘণ্টা বাজানো, পেঁচা, বাদুড়, শিয়াল, কুকুর, হনুমান প্রভৃতি জীব-জন্তুর মুখোশ পরে শোভাযাত্রা বের করা ইত্যাদি সবই হিন্দুয়ানী ও বিজাতীয় অপসংস্কৃতি৷ যা পালন করা কুফরী৷
অপরদিকে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নামে ছেলে-মেয়েদের অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও বিভিন্ন আপত্তিকর মেলামেশার যে মহরা চলে ইত্যাদি সবই হারাম৷ অতএব পহেলা বৈশাখের সকল কর্যক্রম থেকে বিরত থাকা ঈমানী দায়িত্ব৷
والله اعلم بالصواب
📖 প্রমান্যগ্রন্থাবলীঃ
সূরাহ আল ইমরান ১৯, ৮৫ আয়াত৷
সুনানে আবূ দাউদ ৪০৩১ হাদীস৷
মিরকাত শরহে মিশকাত ৮/২২২ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৮৭-৮৮ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে জামেয়া ৫/৬৫ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে রশিদিয়া ২৪৯ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে রহিমিয়া ২/৩৫১ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে হামিদিয়া ২/৩৬৭ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে রহমানিয়া ১/১৭৬ পৃষ্ঠা৷
বেহেশতী জেওর ১/৬৭ পৃষ্ঠা৷
#উত্তর_লিখনেঃ
মুফতী তাহমীদ শামী
আত তাহমীদ ইসলামীক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ৷
তারিখ-০১ বৈশাখ ১৪২৯ বাংলা৷
১৪/৪/২০২২ ঈসায়ী৷